বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:৩৮ অপরাহ্ন
দৈনিকবিডিনিউজ৩৬০ ডেস্ক : র্যাগিংয়ের দায়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) তৃতীয় বর্ষের (৪৭তম ব্যাচ) বিভিন্ন বিভাগের ১১ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শুক্রবার সকালে বিষয়টি নিশিচত করেছেন বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার রহিমা কানিজ। গত ৯ জানুয়ারি ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বহিষ্কৃতরা হলেন, মার্কেটিং বিভাগের মো. শিহাব ও মোহাম্মদ মশিউর রহমান, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের তামীম হোসেন ও রিজওয়ান রাশেদ, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ছালাউদ্দিন ইউসুফ ও রোজেন নূর। বাংলা বিভাগের শিমুল আহমেদ, ইংরেজি বিভাগের সাকিল মাহমুদ, চারুকলা বিভাগের আকাশ হোসেন, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ফয়জুল ইসলাম নিরব এবং ইতিহাস বিভাগের সারোয়ার হোসেন শাকিল। তারা সবাই বঙ্গবন্ধু হলে অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন। এদের মধ্যে শিহাবকে দুই বছরের জন্য এবং বাকি ১০ জনকে এক বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ সময়ে এই শিক্ষার্থীরা হলে কিংবা ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে পারবেন না বলেও জানানো হয়েছে।
বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রর রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত দাফতরিক আদেশে বলা হয়, ২০১৯ সালের ২৩ জুলাই বঙ্গবন্ধু হলে র্যাগিং সংক্রান্ত ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশে এ আদেশ দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য প্রণীত শৃঙ্খলা সংক্রান্ত অধ্যাদেশ-২০১৮ এর ৫(ঘ) ধারা লঙ্ঘন করায় অধ্যাদেশের ৩(২)(খ) ধারা অনুযায়ী অনুষ্ঠিত বিশেষ সিন্ডিকেটের দিন হতে বহিষ্কারাদেশ কার্যকর হবে। এ ছাড়া বহিষ্কারাদেশ শেষ হলে বঙ্গবন্ধ হল ত্যাগ করে বরাদ্দকৃত হলে উঠার নিদের্শও দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, ২০১৯ সালের ২২ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১২টারদিকে তৃতীয় বর্ষের (ঘটনার সময় দ্বিতীয় বর্ষ) মার্কেটিং বিভাগের শিহাব, চারুকলা বিভাগের আকাশসহ ৩০-৩৫জন শিক্ষার্থী র্যাগিং দেয়ার জন্যে গণররুমে (প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা যেখানে থাকে) প্রবেশ করে।
র্যাগিং দেয়ার এক পর্যায়ে রাত দেড়টার দিকে প্রথম বর্ষের ফয়সাল আলমকে ডেকে নিয়ে তাকে পরিচয় দিতে বলে। এ সময় ফয়সাল উচ্চ স্বরে হলের নাম বলতে না পারায় দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা ফয়সালকে মুরগি, চেয়ার, পুশ-আপ (এক ধরনের স্বীয়-শারীরিক নির্যাতন) দিতে বলে। এতে ফয়সাল অস্বীকৃতি জানালে দ্বিতীয় বর্ষের মার্কেটিং বিভাগের শিহাব তাকে ডান গালে পর পর দুটি থাপ্পড় দেয়। দ্বিতীয় থাপ্পড় দেয়ার পরেই ফয়সাল খিচুনি দিয়ে পড়ে যায় এবং তার কান দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ফয়সাল যখন বাকরুদ্ধ হয়ে যায় তখন তার বন্ধুরা এবং দ্বিতীয় বর্ষের তিনজন মিলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে প্রক্টর ফিরোজ উল হাসান বলেন, বঙ্গবন্ধু হলে র্যাগিংয়ের জন্য কয়েকজনকে বহিষ্কার করেছে। আরেকটা বড় কারণ হলো তারা কেউই বঙ্গবন্ধু হলের শিক্ষার্থী না তারা সেখানে অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন তাই এ বহিষ্কারাদেশ। নিজের হলে না থেকে অন্য হলে থেকে আবার র্যাগিং করে এর জন্যই এ শাস্তি।
এসএস